সারাদেশে যখন সকল সরকারি দপ্তরে চলছিলো ঈদের টানা ছুটি তখনো পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ঈদ আনন্দের ব্যস্ত না হয়ে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের পিছিয়ে পড়া মানুষের সেবা প্রদান কার্যক্রম চালিয়ে গেছে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র।
টানা এই ছুটিতে যখন চার পাশে সব কিছুর বন্ধ থাকার কারনে স্থবির ঠিক তখনই মানুষের কাছে চিকিৎসা সেবা পাওয়া না পাওয়া নিয়ে হতাশা। ঈদে এমন সরকারি ছুটিতেও আউটডোর/ইনডোরে সেবা নিতে আসা বিভিন্ন রোগীরা পেয়েছে প্রত্যাশিত চিকিৎসা সেবা। এতে খুশি ও সন্তোষ প্রকাশ করেছে রোগীও রোগীর স্বজনরা।
ঈদের টানা বন্ধেও চিকিৎসা সেবা পেয়ে খুশি বান্দরবান সদর উপজেলার মুসলিম পাড়া থেকে আসা কাউছার হোসেন,তিনি বলেন একদিকে ঈদের বন্ধ অন্যদিকে আমার স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা
মনের মাঝে তখন খুব দুর্চিন্তা বিরাজ করছিলো,এমনিতে থাকি দূর্গম এলাকায় তার উপর ঈদের বন্ধ এমন সময় স্ত্রীকে নিয়ে কি করবো,কোথায় যাবো,সেটা নিয়ে খুব আতংকে ছিলাম,পরে সব দুচিন্তার অবসানে স্ত্রীকে নিয়ে চলে এলাম মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সেখানে এসে দেখি সব ধরণের চিকিৎসা কার্যক্রম ঈদের ছুটিতেও চলছে,মহান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া, সঠিক সেবা পেলাম এবং স্বাভাবিক প্রসব সম্পন্ন হয়।
রাজবিলা এলাকা থেকে আসা একজন রোগী মালিকা ত্রিপুরা বলেন,ঈদের দিন আমার ঘর আলো করে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে জন্ম দিয়েছিলাম আমার প্রথম সন্তান,এটা ঈদের বন্ধে এটা কল্পনা করাও কঠিন ছিলো,তবে চিকিৎসা সেবা পেয়ে সত্যি খুব খুশি আমি।
চেয়ারম্যান পাড়া এলাকার আমেনা বেগম বলেন,ঈদের পরের দিন আমার সন্তান প্রসব করানো হয় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে,ঈদের সময় ও এতো ভালো চিকিৎসা সেবা অপ্রত্যাশিত ছিলো,আমি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করছিমা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সকল চিকিৎসকদের প্রতি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবান মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা:কামরুল মনির রিবন বলেন,চিকিৎসকের কাছে সব সময় চিকিৎসা সেবা প্রদান একটি নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য । বিশেষ করে যে সময় সরকারি বন্ধ বা ছুটি থাকে সেসময় প্রতিটা মানুষ থাকে না দুচিন্তায় তার উপর রোগীরা থাকে দিশেহারা,সেসময় সবই চাই একটু ভালো সেবা আর একটু ভরসা স্থল তাই আমরা সব সময় সকল রোগীদের সঠিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চতে কাজ করি।
যেমন এই ঈদের টানা ছুটিতে আমাদের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে ৩৪জন রোগীতে গর্ভকালিন সেবা(এএনসি), ১০জনকে প্রসব পরবর্তী সেবা (পিএনসি) ৫ জনকে স্বাভাবিক প্রসব,১০জন শিশু রোগীকে চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান,১৪ জন রেগীকে কৈশোরকালীন চিকিৎসা সেবা এবং ২৭জন রোগীকে সাধারণ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছি। আমরা চেষ্টা করি পার্বত্য জেলা বান্দরবানের বিভিন্ন জনগোষ্ঠির বসাবাস এখানকার মানুষের বিশেষ করে মাতৃকালীন বিভিন্ন চিকিৎসার জন্য শেষ ভরসা স্থল মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র তাই আমরা সব সময় চেষ্টা করি এখানকার মানুষকে তাদের প্রত্যাশিত সেবা প্রদান করতে। সে ধারাবাহিকতায় আমরা সব সময় প্রস্তুত আছি আগামীতেও পার্বত্য এলাকার মানুষের চিকিৎসা সেবা প্রদান কার্যক্রম অব্যহত থাকবে।
আরো পড়ুন-বান্দরবান এনসিপির প্রধান সমন্বয়কের ৩ মাসের কারাদণ্ডের পরেও ঘুরে বেড়াচ্ছেন জনসম্মুখে