রবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের তালুকদার পাড়ায় দিনব্যাপী বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা ক্যাম্পে অন্তত তিনশো জন চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৪টা পর্যন্ত এই ক্যাম্পে নারী-পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও স্থানীয় বাসিন্দারা চক্ষু চিকিৎসা সেবা নেন।
চক্ষু চিকিৎসা সেবা গ্রহনকারীরা জানান, এই চক্ষু চিকিৎসা সেবা ক্যাম্প আয়োজনের ফলে দুর্গম এলাকার অসহায় মানুষরা বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন, যা স্থানীয়দের কাছে এক মানবিক উদ্যোগ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। পাহাড়ের গবীর সাধারণ মানুষ অর্থের অভাবে জেলা সদরে বা চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে চিকিৎসা করতে পারেন না। তাই এ আয়োজনকে মানবিক ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।
চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পে চট্টগ্রাম লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতালের আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগীদের চক্ষু সেবা প্রদান করেন। এ সময় প্রয়োজনীয় চশমা, ঔষধ ও অন্যান্য সরঞ্জাম রোগীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যারা চোখের অপারেশনের প্রয়োজনীয় রোগী হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, তাদেরকে চট্টগ্রাম লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হবে বলে জানিয়েছেন।
৭১ বছর বয়সী সেবাগ্রহণকারী মংক্যপ্রু মার্মা বলেন, "আমি চোখে কম দেখি, শহরে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই। এখানে এসে চশমা ও ওষুধ পেয়েছি। ডাক্তাররা বলেছেন, চোখে বেশি সমস্যা হলে বিনামূল্যে অপারেশনও করে দিবে।"
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মেম্যাচিং মার্মা বলেন, আমাদের পাড়ায় এসে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা এ প্রথম পেয়েছি। যার যেতা প্রয়োজন সেটা পেয়েছে। চশমার প্রয়োজন হলে চশমা, ওষুধের প্রয়োজন হলে ওষুধ বা ড্রপ পেয়েছি।
চিকিৎসা ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং, যিনি প্রধান অতিথি হিসেবে সার্বিক সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন।
এ সময় তিনি বলেন, বান্দরবান সদর, থানচি রেমাক্রি, রুমা, বেতছড়া, বিলাইছড়ি, থানচ তিন্দু, আলীকদম ও লামায় এ ধরনের চক্ষু চিকিৎসা সেবা ক্রমান্বয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। সামান্য চক্ষু চিকিৎসার মাধ্যমেও যদি মানুষ সুস্থতা ফিরে পায়, সেটাই এই সেবার প্রকৃত সার্থকতা।
তিনি আরও জানান, যাদের চোখে ছানি অপারেশনের প্রয়োজন হবে, তাদেরকে পরবর্তীতে চট্টগ্রাম লায়ন্স হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অপারেশন করানো হবে। গরিব রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা দেওয়া হবে। এছাড়া যাতায়াতসহ সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হবে।
চিকিৎসা সেবা ক্যাম্পে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন চট্টগ্রাম লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, তারাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উ নু মং মারমা, তারাছা মৌজার হেডম্যান উনিংহ্লা মার্মা, এবং বান্দরবান আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক উছোমং মার্মা প্রমুখ।
আরো পড়ুন
বান্দরবানে ফ্রি ল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কোর্সে পরীক্ষার্থী ২ শতাধিক