বান্দরবানের রুমা উপজেলার পাহাড়ি মাটিতে এ বছর পাইন্না গুলার বাম্পার ফলন হয়েছে। টকটকে লাল ও স্বাদের জন্য খ্যাত স্থানীয় জাতের এই ফলের চাহিদা এখন শুধু রুমাতেই নয়, ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
এর অন্যান্য নামগুলো হলো- টিপফল, টিপটিপানি, টিপাটিপি, লুকলুকি, পেলাগোটা, প্যালা, পায়েলা, ঝিটকি, পলাগোটা, টরফই, পানিয়ালা, পানি আমলা, পাইন্না, পাইন্যাগুলা, বেহুই ইত্যাদি।
বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় চাষীরা এখন আগ্রহী হচ্ছেন এই ফলের চাষে।পাইন্না গুলা বা টিপা ফল চাষে সাফল্যের উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে উঠেছেন বান্দরবানের রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের খামতামপাড়া গ্রামের উদ্যোক্তা হোমপি খিয়াং।
২০০৫ সালে প্রথম ৫ একর জমিতে প্রায় ২০০টি পাইন্না গুলা গাছের চারা রোপণ করেছিলেন। কয়েক বছরের মধ্যেই গাছগুলো ফল দিতে শুরু করে এবং ক্রমেই বাড়তে থাকে ফলন।
এ বছর তিনি প্রায় ৪ লাখ টাকার পাইন্না গুলা বিক্রি করেছেন স্থানীয় বাজারে।তিনি বলেন পাইন্না গুলা থেকে আয় করে সংসার চালাই, বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচের ব্যাবস্থা হয়,আমাদের এলাকায় এখন অনেকে এ ফলের বাগান করছে।
হোমপির স্ত্রী সারা খিয়াং বলেন,পাইন্না গুলার পাশাপাশি আমাদের কলা ও আম বাগান থেকেও বাড়তি আয় হয়। ভালো দাম পাওয়ায় মনু খিয়াং, পিটার খিয়াং, পাইশৈ খিয়াংসহ অনেকেই এখন এ চাষে ঝুঁকছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে , রুমা উপজেলার খামতাং পাড়া, বগালেক পাড়া, পান্তলা পাড়া, বটতলী পাড়া, মুননোয়াম পাড়া, আরথা পাড়া, মুনলাই পাড়া ও পলিকা পাড়ায় পাইন্না গুলার চাষ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।বর্তমানে রুমায় প্রায় ১৫-২০ হেক্টর জমিতে পাইন্ন্যাগুলা চাষ হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলহাসির গজনফর আলী জানান, যদিও এই ফল চাষের কোনো রেজিস্ট্রেশনভুক্ত তালিকা নেই,তবুও কৃষকদের মৌখিক পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে।
রপ্তানিযোগ্য ফলন উৎপাদনের জন্য ঊর্ধ্বতন দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত বারি লুকলুকি-১ জাত নিয়েও কাজ চলছে। নিয়মিত চাষীদের পরামর্শ,সার ব্যবহারের সময়, রোগবালাই দমন বিষয়ে আমরা কৃষকদের পাশে আছি।
আরো পড়ুন