1. bandarbansongbad@gmail.com : বান্দরবান সংবাদ : বান্দরবান সংবাদ
  2. info@www.bandarbansongbad.com : বান্দরবান সংবাদ :
বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ১০:৪৮ অপরাহ্ন

বান্দরবানে অবৈধ বালি উত্তোলন সিন্ডিকেটের স্বর্গরাজ্য লামার সরই ইউনিয়ন

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম,নিউজ ডেস্ক।
  • প্রকাশিত: রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

বান্দরবান পার্বত্য জেলার ৭ টি উপজেলার মধ্যে দুইটি পৌরসভা, একটি সদর উপজেলা এবং অন্যটি লামা উপজেলা।অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিক দিক দিয়ে বিবেচনায় লামা উপজেলা ৭টি উপজেলার মধ্যে জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা।

লামা উপজেলার ৫নং সরই ইউনিয়নে সরকারি ভাবে কিংবা জেলা প্রশাসকের ইজারা বিহীন অবাধে চলছে পরিবেশের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র ধংসকারী হিসেবে চিহ্নিত,ড্রেজার দিয়ে বিভিন্ন প্রবাহমান খাল হতে অবৈধ বালি উত্তোলন।এই চিত্র সদর উপজেলা সহ প্রায় সবগুলো উপজেলাতে বিদ্যমান।

ড্রেজার লাগিয়ে পরিকল্পনাহীন,অনিয়ন্ত্রিত বালি উত্তোলনের ফলে,নদী তীরবর্তী আবাদি কৃষিজমি ভাঙ্গনের মুখে পড়ছে।বালি বোজাই ট্রাক নিয়মিত, চলাচলের ফলে উপজেলার গ্রামীণ সড়কের হয়েছে বেহাল দশা।

রমরমা কাঁচা টাকার গন্ধ আর রাজনৈতিক প্রভাব আর ক্ষমতা দেখিয়ে প্রশাসনের সম্মুখেই প্রভাবশালী মহলের এই অবৈধ বালি বানিজ্যের সুবাদে বালি খেকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা অল্প দিনেই আঙ্গুল ফুলে হয়েছেন কলাগাছ।

স্থানীয়দের দেয়া তথ্য মতে এই ইউনিয়নে সরই খাল কেন্দ্রীক ১২ টি,পুলু খাল কেন্দ্রীক ১৫ টি,আন্ধারী খাল কেন্দ্রীক ৫ টি,হরি খাল কেন্দ্রীক ৮ সহ চল্লিশ টি স্থানে ড্রেজার লাগিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন চলমান আছে।এছাড়া পূর্ব চাম্বি,সরই ইউনিয়নের পশ্চিম ও পার্শ্ববর্তী আজিজ নগর ইউনিয়নের পূর্বে বিভিন্ন স্থানে খালে ড্রেজার লাগিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করছে।পরিদর্শনের হিসেবে চল্লিশ টি হলেও ধারনা করা হচ্ছে, এর গানিতিক সংখ্যা আরো বেশি।

সরজমিনে লামা উপজেলার ৫নং সরই ইউনিয়নের, কেয়াজু পাড়া,হাবিবুর রহমান পাড়া সহ স্বল্প দুরুত্বে বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শনে দেখা যায়, হরি খাল হতে ড্রেজারের সাথে মোটা পাইপ লাইনের মাধ্যমে প্রবাহমান খাল হতে উত্তোলন হচ্ছে বালি।

উত্তোলনকৃত বালি বানিজ্যিক ভাবে বিক্রি হচ্ছে বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন,সরকারি প্রকল্পের ঠিকাদারি সহ বিভিন্ন ভরাট কাজে।স্থানীয়রা জানায় তাদের এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের কোন প্রতিবাদ করা যাবে না,তারা বিএনপির বড় নেতা।

খোঁজ নিয়ে জানাযায় এই অবৈধ বালি উত্তোলন ও বানিজ্যিক ভাবে বিক্রির সিন্ডিকেটের সাথে জড়িতরা উপজেলার সরই ইউনিয়ন বিএনপি,যুবদল,ছাত্রদল রাজনীতির সাথে জড়িত।পদ পদবি আর রাজনৈতিক পরিচয়ে অনেকটা দাপটের সাথেই প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, স্থানীয় হলুদ সাংবাদিক,স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কে ম্যানেজ করে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছেন অনুমতি বিহীন অবৈধ বালি উত্তোলন ও বানিজ্যিক ভাবে বিক্রি।

সরজমিনে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বালি উত্তোলন কারীরা প্রতিবেদক কে ভিডিও ফুটেজ গ্রহণে বাধা দেয়,পরে বালি উত্তোলন সিন্ডিকেটের সদস্য সেলিম আরেক সদস্য, ইউনুছ ও রিয়াদ কে নিয়ে সমস্যা সমাধানে প্রতিবেদক কে চায়ের দাওয়াত দেন।

তাদের হাতে মোড়ানো একটি প্যাকেট প্রতিবেদকের পকেটে গুজে দিয়ে নিউজ না করার অনুরোধ করেন।সিন্ডিকেট সদস্য রিয়াদ জানায়, বালি উত্তোলন অবৈধ জানি, সবাইকে ম্যানেজ করে এই কাজ করছি তাদের সাথে যোগ দেন স্থানীয় স্কুল সভাপতি মোঃ নাছির,এর প্রতিবাদ করায় সিন্ডিকেট সদস্যরা বিষয়টি পরে দেখে নিবে বলে।

প্রসঙ্গত অবৈধ বালি উত্তোলন ও বিক্রির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে লামা উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা,বালি জব্দ,জরিমানা আদায়,বিভিন্ন মেয়াদে অপরাধীদের কারাদণ্ডের আদেশ পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।গত যে কোন সময়ের চেয়ে অভিযান ও জরিমানা বেশি হলেও ক্ষমতাধর রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে সিন্ডিকেট করে প্রভাবশালী মহল আর্থিক ভাবে লাভবান হতে দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন অবৈধ বালি উত্তোলন ও বিক্রি।

সরই ইউনিয়নে অবৈধ বালি উত্তোলনের বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈন উদ্দিন এর সাথে কথা বল্লে তিনি বলেন,সরই ইউনিয়নে অবৈধ বালি উত্তোলনে সংশ্লিষ্ট এদের তথ্য আমার কাছে ছিলো না,আপনাদের মাধ্যমে তথ্য পেয়েছি,দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনত ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।

এ বিষয়ে ৫নং সরই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ ইদ্রিস  বলেন,আমার চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই,বিভিন্ন জায়গায় বলেও লাভ হয়না,রাজনৈতিক ক্ষমতা খাঁটিয়ে তারা এই অবৈধ ব্যাবসা টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন বেশ কয়েকদিন আগে ইউএনও ও পরিবেশ অধিদপ্তর আসছিলো,আমাকে তাদের পক্ষ হত কেউ জানায় নি,উনারা কি করেছে সেই বিষয়েও জানি না।ঢাকা পোস্ট এর এক প্রশ্নে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে আমার সহযোগিতা চাইলে আমি তা করতে বাধ্য।

অবৈধভাবে বালি উত্তোলন ও বিক্রির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করতে আমার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ হতে সকল সহযোগিতা করা হবে।

স্থানীয় সুশীল সমাজের ধারণা কয়েকটি জায়গায় উপজেলা প্রশাসনের অভিযান ও জরিমানা এটা লোক দেখানো মনে হয়,না হলে অভিযানের ভয়ে বালি খেকো সিন্ডিকেট তাদের ব্যাবসা বন্ধ করে দিতো।

এলাকার সাধারণ মানুষের দাবী সরজমিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী,উপজেলা প্রশাসন,পরিবেশ অধিদপ্তর এর যৌথ টিম বালি উত্তোলনের স্পট গুলোতে একযোগে অভিযান পরিচালনা করা গেলে বালি খেকো সিন্ডিকেটের হাত হতে রক্ষা পাবে প্রবাহমান খাল,প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য,চাষের কৃষি জমি আর সরকারি টাকায় করা গ্রামীণ সড়ক গুলো।

সরকারি ভাবে স্থান পরিদর্শন,পরিক্ষা নিরিক্ষা,পরিকল্পনা, নিয়ম অনুসরণের মাধ্যমে জেলার সকল উপজেলা গুলোতে নদী হতে উত্তোলনযোগ্য বালি সরকারি ভাবে ইজারার সুযোগ সৃষ্টি হলে সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায়ও অবদান রাখবে বলে মনে করছেন অনেকেই।

 

 

আরো পড়ুন –লামায় ৭৫ রিসোর্ট সাময়িক বন্ধ ঘোষণা

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট