বান্দরবান এনসিপি'র প্রধান সমন্বয়ক মো: শহীদুল ইসলাম সোহেলের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে একই সংগঠনের নেতারা।
গত জুলাই মাসে সারা দেশে মাসব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসুচী জুলাই পদযাত্রা অনুষ্টিত হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসুচীর আলোকে গত ১৯ জুলাই বান্দরবানেও জুলাই পদযাত্রা অনুষ্টিত হয়। স্থানীয় এনসিপি নেতাদের অভিযোগ এনসিপি'র প্রধান সমন্বয়ক মো: শহীদুল ইসলাম সোহেল জুলাই পদযাত্রার খরচ মেটাতে তার কয়েকজন অনুগত কর্মী ও বহিরাগত লোক নিয়ে বান্দরবানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর হতে প্রায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা উত্তোলন করে।
এছাড়াও বান্দরবানের বিভিন্ন ঠিকাদার হতেও চাঁদা আদায় করা হয়।আরো অভিযোগ উঠে পলাতক ও আত্নগোপনে থাকা আ'লীগের সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর সহ দলটির সিনিয়র নেতাদের মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে।
পদযাত্রা কর্মসুচী শেষে এনসিপি তাদের এক সভায় উত্তোলনকৃত মোট ২৫ লাখ টাকার স্থলে ২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা পেয়েছেন বলে হিসাব দাখিল করেন।
বান্দরবান এনসিপি'র যুগ্ন সমন্বয়ক আ হ ম সায়েমুল ইসলাম জানান,বান্দরবান এনসিপি'র প্রধান সমন্বয়ক মো: শহীদুল ইসলাম সোহেল জুলাই পদযাত্রার খরচ মেঠাতে তার কয়েকজন অনুগত কর্মী ও বহিরাগত লোক নিয়ে বান্দরবানের সরকারী বিভিন্ন দপ্তর,ব্যবসায়ী ও আত্নগোপনে থাকা আ'লীগ নেতাদের কাছ থেকে প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন।
অনুষ্টান শেষে পার্টির সমন্বয় সভায় তিনি আমাদেরকে মাত্র ২ লক্ষ ৫০ হাজার আয় দেখিয়েছেন এবং সর্বমোট খরচ দেখিয়েছেন ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
এছাড়াও আমাদের কর্মসুচী উপলক্ষ্যে কেন্দ্র থেকে পাঠানো ২ লাখ টাকা পাওয়ার বিষয়টি গোপন রেখেছেন।
আমাকে অনুষ্টান বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক বানানো হয়েছে। অনুষ্টান বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিভিন্ন দোকানে মালামাল ক্রয় ও বিভিন্ন খরচ বাবদ আমার প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দায় দেনা রয়েছে।
জুলাই পদযাত্রা শেষ হয়েছে দুই মাস সময় অতিবাহিত হলেও এই বকেয়া টাকা এখনো পর্যন্ত আমাকে দেয়নি। বকেয়া টাকার জন্য পাওনাদাররা আমাকে অতিষ্ট করে তুলেছে।
এনসিপির যুগ্ন সমন্বয়কারী আব্দুল গফুর জানান,জুলাই পদযাত্রার ব্যয় মেটাতে কোন ফ্যাসিষ্ট আ'লীগ নেতাদের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেয়ার স্থানীয় বা কেন্দ্রের কোন সিদ্ধান্ত না থাকার পরেও বান্দরবান এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক মো: শহীদুল ইসলাম সোহেল আমাদের না জানিয়ে সম্পুর্ন ব্যক্তিগত ভাবে পলাতক ও আত্নগোপনে থাকা আ'লীগ নেতাদের কাছ থেকে মামলার ভয় দেখিয়ে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা আদায় করেছে।
তিনি এসব টাকার হিসাব আমাদের দেননি। তিনি আরো জানান, ক্ষমতার অপব্যবহার টাকা আত্মসাৎ ঘটনায় অধিকাংশ নেতা কর্মী প্রধান সমন্বয়কের বিরুদ্ধে চলে গেছে।
তাছাড়াও গত ১৯ আগষ্ট জুলাই পদযাত্রা কর্মসুচীর পর থেকে একটিও কোন প্রোগ্রাম বা কর্মসুচী পালন করতে পারেনি।
টাকা আত্বসাৎ করে বান্দরবান এনসিপি'র প্রধান সমন্বয়ক মো: শহীদুল ইসলাম সোহেল প্রায় আত্নগোপনে চলে গেছে।
টাকা আত্নসাতের ঘটনা নিয়ে আমি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতিবাদ করলে তিনি আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। বান্দরবান এনসিপি'র প্রধান সমন্বয়ক মো: শহীদুল ইসলাম সোহেলের মত প্রতারনা মামলার আসামী,পার্টির আর্থ আত্মসাতকারী ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারীর সাথে কখনো রাজনীতি করা সম্ভব নয়। এই বিষয়ে কেন্দ্রকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।
যদি কেন্দ্র থেকে আমরা এর সঠিক সামাধান না পাই তাহলে আমরা সকল নেতা কর্মী এনসিপি থেকে গনহারে পদত্যাগ করবো।
এই বিষয় এনসিপির পার্বত্যাঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক ইমন সৈয়দ জানান,বান্দরবান এনসিপি'র প্রধান সমন্বয়ক মো: শহীদুল ইসলাম সোহেলের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ যে, সাবেক ফুটবলার মো: শহীদুল ইসলাম সোহেলকে বান্দরবান এনসিপি'র প্রধান সমন্বয়ক করার টর থেকে তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে তিনি বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ৯ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ ভাগিয়ে নেয়ার জন্য চেষ্টা চালায়।
এই কাজ ভাগিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে তিনি তার অনুগত কিছু বহিরাগত লোক দিয়ে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শহরে পানি সরবরাহের পাইপ লাইন কাজ বন্ধ করে দেয়।
বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসলে বান্দরবান পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাউছারের হস্তক্ষেপ তা সামাধান হয়।
এবিষয়ে বান্দরবান এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক মো: শহীদুল ইসলাম সোহেলের সাথে মোবাই ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন তারিখে স্থানীয় সাবেক ফুটবলার মো: শহীদুল ইসলাম সোহেলকে প্রধান সমন্বয়ক করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি'র) বান্দরবান জেলা কমিটি ঘোষনা করা হয়।
আরো পড়ুন-