বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও আলীকদম উপজেলায় পৃথক দুইটি হত্যাকান্ডের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছেন বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার।
মঙ্গলবার (২২শে জুলাই)জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এই প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
নাইক্ষ্যংছড়িতে পরিকল্পিত ভাবে অপহরণ ও হত্যাকান্ড-
পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের জানান গত ১৮ই জুলাই নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৩নং ঘুমধুম ইউনিয়নের,৮নং ওয়ার্ডের রেজু আমতলী পাড়ার মোঃ সৈয়দ নূর কে পরিকল্পিত ভবে ডেকে নিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে মোঃ ইসমাইল(২৭), ও তার দুই সহযোগী রহমত উল্লাহ(৩২),আলী হোসেন(২৬)।
প্রেস কনফারেন্সে জানানো হয় আসামী ইসমাইলের সাথে ভিকটিম সৈয়দ নূর এর বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিলো।আসামী ইসমাইল তার বন্ধু সৈয়দ নূর থেকে ৭০ হাজার টাকা ধার হিসেবে গ্রহণ করে,ধারকৃত টাকা নির্ধারিত সময়ে সৈয়দ নূর কে ফেরত না দেয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়।স্থানীয় বৈঠকে টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে ঘাতক ইসমাইল ভিকটিম সৈয়দ নূরের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়।পরবর্তীতে গত ১৮ই জুলাই দুপুর ২.৩০ এর দিকে পর ঘাতক ইসমাইল মোবাইল ফোনে সৈয়দ নূর কে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে দূর্গম সীমান্তবর্তী একটি পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে আসে।
ঘাতক ইসমাইলের এই কাজে সহযোগিতা করে কক্সবাজার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের, ক্যাম্প -২ এ থাকা দুইজন রোহিঙ্গা নাগরিক আলী উল্লাহ্র পুত্র, রহমত উল্লহ ও মোহাম্মদ এর পুত্র, আলী হোসেন।
এর পর আসামীরা সৈয়দ নূর এর মোবাইল ফোন থেকে তার পরিবারের কাছে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে মুক্তিপন বাবদ ৫০ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আদায় করে।
আসামীদের সব শর্ত মানার পরেও সৈয়দ নূর পরিবারের কাছে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় মামলা দায়ের করে।এর প্রেক্ষিতে অপহৃত সৈয়দ নূর কে উদ্ধারে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা ও ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ অভিযানে নামে।
পুলিশের অভিযানে গত ২১শে জুলাই ঘুমধুমের আজুখাইয়া এলাকা হতে গ্রেফতার হয় মামলার প্রধান আসামি ইসমাইল। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত, রোহিঙ্গা নাগরিক, রহমত উল্লাহ কে গ্রেফতার করে।আসামীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডুলুবুনিয়ার গহীন পাহাড়ের খাদ হতে ভিকটিম সৈয়দ নূরের লাশটি উদ্ধার করে।
পরে অভিযানে আরেক রোহিঙ্গা নাগরিক আলী হোসেন কে গ্রেফতার ও ভিকটিম সৈয়দ নূরের লুন্ঠিত মোটরসাইকেল টি উদ্ধার করে।
প্রেস কনফারেন্সে জানানো আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে তারা ভিকটিমকে অজ্ঞাত স্থানে এনে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পাহাড়ের খাদে ফেলে দেয়।
আলীকদমে বন্দুক নিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে অসতর্কতায় নিহত এক পর্যটক।
এদিকে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শহীদুল্লাহ কাওছার আলীকদমে নিহত পর্যটকের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন।
আলীকদম উপজেলার ৪নং কুরুকপাতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের তরনী পাড়ায় ঢাকা হতে ৪ জন বন্ধু এবং চট্টগ্রাম হতে ১ জন সহ পাঁচ বন্ধু গত ২০শে জুলাই গুরতে আশে এবং জুমঘরে রাত্রি যাপন করে।
পরের দিন গত ২১শে জুলাই সকাল ৮ টার দিকে জুম ঘরের চালায় থাকা একটি একনলা দেশীয় তৈরী বন্দুক দেখতে পেয়ে আসামী মীর মাহাদি হাসান নাবিল কৌতুহলবশত হাতে নিয়ে তার বন্ধু ভিকটিম মৃত ত্বোহা বিন আমিনকে মোবাইলে ছবি তুলতে বলে।
ছবি তোলার একপর্যায়ে বন্দুকের ট্রিগারে চাপ দিলে বন্দুক থেকে সিসা গুলি বের হয়ে ভিকটিমের বুকের ডানপাশে লাগে,এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পরে আলীকদম থানা পুলিশ ঘটনাস্থল হতে আসামী মাহাদী হাসান নাবিল কে আটক করে থানায় নিয়ে আশে, পরে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে আলীকদম থানায় পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা দায়ের করে এবং এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্রের মালিক এর বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলা রুজু করেছে বলে প্রেস কনফারেন্সে জানানো হয়।
আরো পড়ুন –